শাওয়াল মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥
বরকতময় রমযান মাসের পর আসে শাওয়ালুল মুয়াজ্জম বা মহিমাময় শাওয়াল মাস। রমযানের বরকত লাভের জন্য ত্যাগ, কষ্ট-ক্লেশ ও দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের খুশি নিয়ে পশ্চিম আকাশে উদিত হয় শাওয়ালের নতুন চাঁদ। মাসটির প্রথম দিনেই পালিত হয় মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর।
ঈদ শব্দটি আরবি, যার অর্থ আনন্দ, বার বার ফিরে আসা। ফিতর শব্দটিও আরবি, যার অর্থ রোজা ভাঙা। ঈদুল ফিতরের অর্থ রোজা শেষ হওয়ার আনন্দ, আল্লাহর নিয়ামত উপভোগের অনুমতি লাভের আনন্দ। ঈদের দিন আল্লাহ তায়ালার অনেকগুলো অনুগ্রহÑ যেমন নিষেধ করার পর আবার দিনে পানাহারের অনুমতি প্রদান, ফিতরা আদায় করার সুযোগ দান ইত্যাদি বার বার ফিরে আসে।
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) যখন মদিনায় আসেন, তখন দেখেন যে সেখানকার লোকেরা বছরে দুদিন (নওরোজ ও মেহেরজান উৎসব) আনন্দ করে, খেলাধুলা করে। তিনি বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদের এ দুদিনের পরিবর্তে আরও অধিক উত্তম ও কল্যাণকর দুটি দিন দিয়েছেন। এক. ঈদুল আজহা এবং দুই. ঈদুল ফিতর।’ (আবু দাউদ)।
এভাবে মুসলমানদের ইতিহাসে পৃথক উৎসবের সূচনা হয়। এটা দ্বিতীয় হিজরী, অর্থাৎ ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের ঘটনা। মহানবী (সা.) ঘোষণা করলেন, ‘সব জাতিরই ঈদ বা উৎসবের দিন থাকে, এটা আমাদের ঈদ।’ (সহিহ্ বুখারি)।
আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া গ্রন্থে ইবনে জারির (রা.)-এর বর্ণনা মতে, দ্বিতীয় হিজরিতে মহানবী (সা.) প্রথম ঈদ পালন করেন। ঈদ মুসলমানদের জীবনে শুধু আনন্দই নয়; ....বিস্তারিত
একটি ঐতিহাসিক ঈদকার্ড
॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥
ঈদ উপলক্ষে বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতজনকে ঈদকার্ড পাঠানোর রীতি এ তথ্য-প্রযুক্তির যুগে অনেকটাই কমে গেছে। সেই স্থান দখল করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মোবাইল ফোনের খুদেবার্তা। কিন্তু কোনো কোনো ঈদকার্ড কোনো দিন হারিয়ে যাবে না। আজ এমনই একটি ঈদকার্ড ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে তুলে ধরা হলো। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মকবুল আহমাদ (রাহ.) এ ঈদকার্ড তুলে ধরে তার কনিষ্ঠ সন্তান ঈসমাইল মুহাম্মাদ নোমানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া মন্তব্য পড়ার পর মনে হলো সাপ্তাহিক সোনার বাংলার পাঠকদের সাথে তা শেয়ার করলে তারা উপকৃত হবেন। দাওয়াতি কাজ এবং মানুষের মনে বিপ্লব সৃষ্টির যে হিকমত তিনি অবলম্বন করেছেন, তা আজও আমাদের আলোড়িত করে। বর্তমানে করছেন এবং ভবিষ্যতে যারা দাঈ ইল্লাহর মহান দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের জন্য এতে অনেক শিক্ষণীয় দিক আছে মনে করে তা তুলে ধরা হলো।
জনাব ঈসমাইল মুহাম্মাদ নোমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য কলামে লিখেছেন, তার হাতে মকবুল আহমাদ (রাহ.) কয়েকটি ঈদকার্ড দিয়ে বিভিন্ন ফ্ল্যাটে তাকে পাঠান বিতরণের জন্য। তিনি তখন তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, বাজারে কত সুন্দর সুন্দর ঈদকার্ড পাওয়া যায় তা না দিয়ে এটি কেন তিনি দিচ্ছেন। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, ‘এ ঈদকার্ডের বক্তব্যগুলো পড়লে পাঠকের মনে যে বিপ্লব সৃষ্টি হবে, বাজারে ঈদকার্ডে কি তা হবে?
তার বিতরণ করা ঈদকার্ডে কী বক্তব্য থাকতো তা তুলে ধরা হলো-
কুরআন ও আপনার ঘর উপশিরোনাম দিয়ে ....বিস্তারিত
আল্লাহর লানত থেকে বাঁচতে রমাদানে গুনাহ মাফ করাতেই হবে
॥ একেএম রফিকুন্নবী॥
মহান আল্লাহর শেষ নবী মুহাম্মদ সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমাদান মাসের রোজা পেল, কিন্তু তার গুনাহ মাফ করাতে পারলো না, তার ওপর আল্লাহর লানত। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে বা শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তার জন্য দুনিয়ায় যেমন খাওয়া-পরা, চলাফেরা, নদনদী, পাহাড়-পর্বত, গাছপালা, শস্য-শ্যামল আবাসস্থল বানিয়েছেন; যুগে যুগে নবী-রাসূল আ. পাঠিয়ে বাস্তব জীবনে আল্লাহর বাণী প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন আবার আখিরাতে সীমাহীন সুখ-শান্তিতে ভরা জান্নাত বানিয়েছেন মানবজাতির কল্যাণের জন্য। সেই আল্লাহ যদি কারো প্রতি লানত দান করেন, তাহলে কত ভয়াবহ অবস্থা। আর আল্লাহ তায়ালা তার সৃষ্টির সেরা মানবজাতি কল্যাণই করতে চান। ফলে ১২ মাসের সেরা রমাদানে সাওয়াবের পরিমাণ ৭০-৭০০ গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, রমাদানে রোজা পালনকারীদের সাওয়াব আল্লাহ তায়ালা হিসাব করে দেবেন না, তিনি খুশি হয়ে বান্দাকে যত খুশি তত প্রতিদান দেবেন এবং রোজাদারদের জন্য জান্নাতে ৮ দরজার মধ্যে ‘রাইয়ান’ নামের দরজা নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। এ দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করতে পারবেন। রোজাদাররা এ দরজা দিয়ে প্রবেশের পরপরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে আর খোলা হবে না। রোজাদাররা নিয়ামতভরা জান্নাতে সীমাহীন সময়ের জন্য অবস্থান করবেন তার সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে।
তাই রমাদান আমাদের থেকে চলে যাচ্ছে আর কয়েকদিন মাত্র বাকি। এর মধ্যে আল্লাহর ঘোষণা রমাদানের শেষ দশকে বেজোড় ....বিস্তারিত
ঈদের দিনে করণীয়
॥ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন॥
মুসলিম মিল্লাতের দুটি ঈদের একটি ঈদুল ফিতর। সুতরাং ঈদুল ফিতর বিশ্ব মুসলিমের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহোৎসব। এটি আরবি হিজরী সনের দশম মাস তথা শাওয়াল মাসের প্রথম দিন। রমযানের বরকত লাভের জন্য ত্যাগ, কষ্ট-ক্লেশ ও আয়াস সাধ্য-সাধনার পর যে মাসটি সাফল্যের বার্তা নিয়ে আসবে, তা অবশ্যই মহান। সে মাসের প্রথম দিনই ঈদ উৎসব। ঈদুল ফিতর ওই আনন্দ উৎসবকে বলা হয়, যা রমযানের পর আসে। (ড. ইবরাহীম আনীস ও তার সাথীবৃন্দ, আল মুজামুল ওয়াসীত, ইস্তাম্বুল: আল মাকতাবুল ইসলামী তা.বি. ২/৬৯৪)।
ঈদের দিনে করণীয়
১.তাকবীর বলা
রাসূল (সা.) ঈদের দিন বেশি বেশি তাকবীর বলতেন- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লালাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়াল্লিাহিল হামদ। হাদীসে এসেছে, তিনি ঘর থেকে ঈদগাহ পর্যন্ত তাকবীর দিতে দিতে যেতেন। (হাকিম, তালখীসুল হাবীর, পৃ. ১৪২)।
ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহ.) বলেছেন, ঈদুল ফিতরের তাকবীর শুরু করবে ঈদের চাঁদ উদিত হওয়ার পর থেকেই। ঈদের সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত রাসূল (সা.) তাকবীর পাঠ করতেন।
২. গোসল করা
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন গোসল করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৩১৫)।
৩. সুন্দর পোশাক পরিধান করা
রাসূল (সা.) ঈদের দিন সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতেন। আবদুল্লাহ ইবনে ....বিস্তারিত
লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও মর্যাদা
॥ এম লোকমান হোসেন॥
লাইলাতুল কদর আরবি শব্দ। লাইলাতুল অর্থ রাত আর কদর শব্দের অর্থ সম্মানিত। লাইলাতুল কদর তথা সম্মানিত রাত। লাইলাতুল কদরের রাত হচ্ছে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এটাকে শবেকদরও বলা হয়। শবেকদর ফারসি শব্দ। শবে অর্থ রাত বা রজনী আর কদর অর্থ সম্মানিত।
এমাসে পবিত্র কুরআনুল কারিম নাজিলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ও মহাসম্মানিত রাত হিসেবে আমাদের জন্য দান করেছেন। প্রতি বছর রমযান মাসের শেষ দশকের রাতগুলোর মধ্যে কোনো এক বেজোড় রাত হলো ভাগ্য নির্ধারণ বা লাইলাতুল কদরের রাত।
যে রাতে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছে, সে রাতই লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি কুরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন, মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতরণ করেন; তাঁদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে সব বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এ শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষা বা ফজর পর্যন্ত। (সূরা আল কদর)।
রমযান মাস পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস। শবেকদর কুরআন নাযিলের রাত। এ রাতেই প্রথম পবিত্র মক্কা মুকাররমার হেরা পর্বতের গুহায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে রুহুল আমীন খ্যাত ফেরেশতা হজরত জিবরাইল আ.-এর মাধ্যমে রাহমাতুল্লিল আলামিন প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল করেন। ....বিস্তারিত
যাকাত-ফিতরা কী এবং কার জন্য
॥ মুহাম্মদ আল্-হেলাল॥
মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা মানব ও জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্য। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে ঘোষণা আল্লাহ করেন, ‘আমি জিন ও মানবজাতিকে শুধু আমার দাসত্বের জন্যই সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা আয-যারিয়াত: ৫৬)। তিনি দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছেনÑ যে কর্মসূচি পালন করাই আমাদের জন্য আল্লাহর দাসত্ব করা।
এজন্য তিনি ১০৪ খানা সংবিধান, ব্যবহারবিধি বা ম্যানুয়াল দিয়ে পাঠিয়েছেন এ দুনিয়ায়। আর সেই কিতাব পাঠ ও ব্যবহারবিধি বা ম্যানুয়ালের সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বশেষ কার্যকরী সংবিধান হলো মহাগ্রন্থ আল্-কুরআন। যেটি কুরআনুল হাকিম, কুরআনুল কারীম, কুরআনুল মাজীদ, আল-ফুরকান যথাক্রমে বিজ্ঞানময় কুরআন, মহিমান্বিত কুরআন, মর্যাদাবান্বিত কুরআন, সত্য-মিথ্যার প্রভেদকারী ইত্যাদি নামে সমধিক পরিচিত। এ সংবিধান, জীবনবিধান তথা মহাগ্রন্থ আল্-কুরআনে আল্লাহ তায়ালা রাজনীতি, সমাজনীতি, স্বাস্থ্যনীতি, রাষ্ট্রনীতি ইত্যাদির মতো অর্থনীতিও নিবিষ্ট করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা যে অর্থনীতি আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, সেটি ইসলামী অর্থনীতি নামে পরিচিত। যাকাত ইসলামী অর্থনীতির একটি অংশ।
যাকাত আরবি শব্দ যেটির অর্থ পবিত্র, শুদ্ধ, পরিশুদ্ধ, প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি। অর্থাৎ যাকাত প্রদানের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র, প্রবৃদ্ধি বা পরিশুদ্ধ হয়।
এটি ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক ....বিস্তারিত
মোশাররফ হোসেন খান-এর কবিতা
নূহের জাহাজ
অনেক পাহাড়ের সমন্বয়ে একটি জীবন
অনেক সমুদ্রের সমন্বয়ে একটি জীবন
অজস্র ঝর্ণার সমন্বয়ে একটি জীবন
একটি জীবন সমান অনেক রৌদ্রদগ্ধ পোড়ামাটি।
সরলরেখার স্রোতে চললে জীবন সরল
বক্ররেখার ওপর দিয়ে গেলে জীবন বক্র—-
জীবন কখনো ভেঙে দেয় এসব জ্যামিতিক নিয়ম
বহু সংজ্ঞার আগল ছিঁড়ে জীবন কখনো হয়ে ওঠে
অন্য এক পৃথিবী... মহা পৃথিবী।
ভাসমান বাতাস কিংবা বহতা স্রোত চলে যায় প্রতিকূলে
প্রতিকূলতার বিপরীতে যে জীবন—- সে এক চলমান যুদ্ধ—-সীমাহীন মহাযুদ্ধ।
আকাশ ও পৃথিবীর নিস্তব্ধতার মধ্যেও স্ফুরণমুখ যে জীবন শতধায় ধাবিত—-
তাকেই কি বলা যায় উপদ্রুত জীবন-উপকূল!
স্থবিরতার নাম জীবন নয়—-
জীবন সে তো সীমাহীন বিপন্নতার মধ্য দিয়ে ছুটে চলা এক মরণজয়ী ঘৌড়দৌড়
কাল-মহাকাল ছিন্ন করে সটান দাঁড়াবার স্পর্ধা দেখাতে পারে একমাত্র জীবন।
জীবন তো তাকেই বলি—-
যে জীবন নিদারুণ নিষ্ঠুরতার উৎসের বিপরীতে
অসংখ্য আকাক্সক্ষার সমকূলে
সদা ভাসমান নূহের জাহাজ!
....বিস্তারিত
মাহফুজুর রহমান আখন্দ-এর কবিতা
ফিলিস্তিন
আতঙ্কিত পথিকের মতো থমকে দাঁড়ালো সময়
পাখিদের কণ্ঠে থেমে গেল সাহসের গান
বাতাসের সুরে সুরে বন্ধ্যত্বের গ্লানি, আসমানে হিংস্র থাবা
কড়াৎ মড়াৎ আর গুড়ুম গুড়ুম শব্দে প্রকম্পিত দুনিয়া, কালো ধোঁয়ার পাহাড়
বাঁচাও বাঁচাও শব্দে ভাসে বেদনার্ত মানুষের আর্তনাদ
রক্তের পিচ্ছিল পথে পরিণত হয় ফিলিস্তিন, গাজার মরুবালি
শিশুদের ছিন্নভিন্ন দগদগে লাশ পর্দার আব্রুতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে
মা হাওয়ার বংশধর- অবলা সরলা মা আমার
বাবার শশ্রুমণ্ডিত মুখের টুকরো ছিটকে পড়ে আছে দেহ থেকে দূরে-বহুদূরে
ধ্বংসের তাণ্ডবলীলায় সারি সারি দেয়াল, স্বপ্নের আবাস, মাথা গোঁজাবার ঠাঁই
মুষ্টিবদ্ধ পাথরটুকরো তেমনই আছে
ফর্সা দেহে লালরক্ত মেখে নিশ্চুপ শুয়ে আছে ভাইটি আমার
‘স্বাধীনতা চাই, স্বাধীনতা চাই, নিরাপদে বাঁচবার স্বাধীনতা’
শেষ নিশ্বাসের সাথে কুণ্ডলী পাকিয়ে আকাশে পাড়ি দিচ্ছে সেই আর্তনাদ
দেখবার কেইবা আছে!
আমেরিকা, সে তো নেতানিয়াহুর জামায় লুকানো ভেজা বিড়াল
জাতিসংঘ, ইহুদির কাছে নাকে খত দিয়ে বসেছে তখতে
নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া লিখতেই কেটে যাচ্ছে হাজারো সকাল
‘ওআইসি, দেখিলাম.. কি করা যায় ভাবিতেছি’
ভাবনার ডালে বসে ভাবতে ভাবতে ফজর পেরিয়ে গেল
তখনো ঘুমে আরববিশ্ব, মুসলমানের সাহসী অহংকার
অবশেষে, বাঁচার লড়াইয়ে আবারো নিজেদের বাহু
পাথরটুকরো, গুলতি বাটুল এবং সাহসের পতাকা
মরতেই হচ্ছে যখন, একসাথে মরি সাহসের ....বিস্তারিত
আশরাফ জামান-এর দুটি কবিতা
ঠিকানা
দিন যায় রাত আসেÑ বৃষ্টি ঝরা রাত
কোলাহল থেমে যায় মানুষের
একা বসে থাকি অন্ধকারে এক গভীর নির্জনে।
মানুষের ভালোবাসা জীবনের চাওয়া-পাওয়া
সব একাকার করে দিতে মনের আকাশে
কেন জানি শুধু একটি প্রদীপ জ¦ালি, একটি তারকা খুঁজি
মনে হয় সেটাই আমার আলয়-আশ্রয়
আমার শান্তির ঠিকানা।
আর সব মিছে সমস্ত পৃথিবী।
বন-বনান্ত বাংলার ঘন শ্যাম প্রকৃতি
মাঠ-ঘাট শীতলক্ষ্যার প্রবাহিত স্রোত;
স্বজন-বন্ধু ও ঘর-সংসার
নারী-প্রেয়সীসহ সকল অঙ্গীকার
মনে হয়, তাকে পেলে সবই পেলাম।
আপনার জন্মদিনে
[পরম শ্রদ্ধেয় সুসাহিত্যিক মুহম্মদ মতিউর রহমানকে]
চল্লিশ বছর আগে আপনাকে প্রথম দেখেছিলাম,
পেয়েছিলাম স্নেহের পরশ যে কিশোর বয়সে
ছিলাম আপনার আদরের একজন শাহীন।
আজও স্মৃতির মণিকোঠায় তা জেগে আছেÑ
সেদিন ছিলেন শিশু সংগঠনের সংগঠক এবং তরুণ লেখক;
সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় ছিল বিচরণ।
পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন শিক্ষকতাকে,
এক মহান আদর্শকে গ্রহণ করে চলেছেন সে পথে
যে পথ যুগে যুগে জাতিকে দেখিয়ে গেছেন মহাপুরুষগণ।
আপনি দীর্ঘজীবী হোন, কর্মময় জীবন হোক সাফল্যমণ্ডিত
পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে এ আমার বিনীত প্রার্থনা।
আপনার জন্মদিনে জানাই প্রীতি আর একগুচ্ছ রজনীগন্ধাসহ শুভেচ্ছা।
....বিস্তারিত
জাকির আবু জাফর-এর কবিতা
নিখোঁজ বিবৃতি
সমাজের কিছু পরম শ্রদ্ধেয় বহুদিন ধরে নিখোঁজ
অতলে কোথায় তলিয়েছে চেতনায়-ই নেই কারো
অথচ উঁচু জীবনের এরাই চৌকস পাহারাদার
মানুষকে মানবিক তুঙ্গে উন্নতির এরাই দণ্ড
নিখোঁজদের তালিকা?
শুনলে বিস্ময়ে স্তব্ধতায় ঝিম হবেন!
শুনুন তবে-
প্রথমজন- জনাব সাহস! সত্য উচ্চারণে তিনিই তো আদর্শের হিমালয়। সূর্যের বুক থেকে উত্তাপ ছিনিয়ে মিথ্যার মুখোশ উন্মোচনের কে আছে তেমন!
দ্বিতীয়জন- শ্রদ্ধেয় প্রতিবাদ! রাজপথ থেকে সমাজের রন্ধ্রে কোথাও নেই তিনি
মানুষের বুকে ক্রোধের জ্বলজ্যান্ত দোজখ
অথচ মুখে নিস্তব্ধতার তালা
হাশর মাঠের মতো শুধু ইয়া নাফসির ফিসফাস
তৃতীয়জন- সম্মানীয় ঐতিহ্য! কেউ ধারই ধারে না তাঁর। আধুনিক নায়ক নামে খলনায়কদের দৌরাত্ম্যে ঐতিহ্যানুসারীদের চোখে ঘুম নেই
তারপর তালিকায়- স্বনামধন্য মূল্যবোধ!
বিত্তধরেরা উৎভ্রান্তির উপত্যকায় বুঁদ
মধ্যবিত্ত যুবক যুবতীরা ভয়াল দেউলিয়া
ক্ষুধার অনলে নিম্নবিত্তের সবকিছু ছারখার
মূল্যবোধ চাষের কোনো চাষী নেই
সকলেই চেতনার জালে বন্দী
এরপর তালিকায়- বিশিষ্ট বিনয়! তিনি নেই বলে ঔদ্ধত্যের ষাঁড়গুলো দাপাচ্ছে গোটা সমাজ
পেঁচার দৌরাত্ম্যে পাখিরা পলাতক
আমাদের ভদ্রশ্রেণি কুলুপ আঁটা, ভাষাহীন
সব শেষে- মহামন্য ন্যায়বিচার! তিনি নিখোঁজ বলে মানবিক খামারগুলো অপরাধী দামড়ায় ভরে উঠছে। শেয়ালের ....বিস্তারিত
শরীফ আবদুল গোফরান-এর কবিতা
অফুরন্ত শান্তির ঈদ
রাব্বে কারিম-
ঈদের খুশি বিক্ষুব্ধ ঝড়-ঝঞ্ঝায় কেমন যেন ম্রিয়মাণ হয়ে গেছে
প্রতিটি শহর নগরের নীলাকাশ মেঘে ঢাকা পড়েছে
চাঁদের মুখও যেন মলিন
এখন আর আগের মতো জোসনা ছড়ায় না
সর্বনাশা পঙ্গপাল ঘিরে ফেলেছে
সমস্ত আকাশ জমিন
বান্দার সকল অহংকার মুখ থুবড়ে পড়েছে
প্রভু রহম করো-
অনাকাক্সিক্ষত ঝড়-ঝঞ্ঝা থেকে মুক্তি দাও
কবুল কর তোমার প্রিয় বান্দার ফরিয়াদ
আলোকিত ঐশ্বর্য নিয়ে
বেঁচে থাকতে দাও তোমার দুনিয়ায়
রাব্বেকারিম,
তোমার দুয়ারে দু’হাত তুলে ক্ষমা ভিক্ষা চাই
সিজদায় নত করি শির
আমার প্রতিটি সিজদার মাঝে যেন
খুঁজে পাই অফুরন্ত শান্তির ঈদ।
....বিস্তারিত
শামসুজ্জামান মতীন-এর কবিতা
সোনার বাংলা
অন্ধকার আর অন্ধকার নিকষ কালো অন্ধকার
যুদ্ধ হচ্ছে অন্ধকার আর অন্ধকারের, মসীলিপ্ত
সেই কবে কাল
হঠাৎ নয়Ñ ধারাবাহিকতার সূচিতে হচ্ছে যুদ্ধ
মহাবীরের দোফলার আগুনে,
ঝলসে উঠছে অন্ধকারের বুকচিরে
নিরন্ন ব্যভিচারী জনপদ হেসে উঠল
দ্বীপের চারদিকে সবুজ, লাল, হলুদের
ঝাঁকড়া পিয়ানো তো স্পষ্ট হয়ে উঠছে ‘আল্লাহু আকবার’
দোলা খাচ্ছে নীলে
জাতির আত্মা পেলো মুক্তির স্বাদ,
হীত বিশুদ্ধ বিবেক, কল্যাণকর আবেগ
ভিত গড়তে জন্ম নিলো এক লেখাময়ছটা
পুরো দেশটাকে বুকে ধরে রাখতে
ভূখণ্ডের নামে হলো তার নাম ‘সোনার বাংলা’
আমি তোমায় ভালোবাসি।
মানবসভ্যতার সূচনাকারী নূহ (আ.) তাঁর পুত্র নাতিরাই
আমার প্রিয় জন্মভূমির ইতিকথায় আছেন জড়িয়ে
নবকিশলয় ঠেলে দিচ্ছে তারা উত্তরসূরি
পাখির বিচিত্র মধুমাখি এলোমেলো সুর
পাতার ফাঁকে মুখরিত বসন্তের কোকিল
বখতিয়ারের তলোয়ারের ফুলকি
দোল খাচ্ছে জাগরণের বাণী
আলাউদ্দিন হুসেনশাহ, হাজী শরীয়তুল্লাহ, নিসার
তিতুমীর, ঝাঁকড়া বাবরির ‘বলবীর’
পিঠ ঝাঁঝরা করা সাত সাগরের মাঝির ফররুখ্
এরাই তো ‘সোনার বাংলা’র নির্মাতা
সুবর্ণজয়ন্তী পার হওয়া ‘সোনার বাংলা’ (সাহিত্য)
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জানাই তোমাকে ‘স্যালুট’।
....বিস্তারিত
মুহাম্মদ রেজাউল করিম-এর কবিতা
সরল পথ
ভুল পথে যাব না আর
যাব তো সঠিক পথে
হে প্রভু
তবে পথ চলার তাওফিক দাও
চারপাশে অন্ধকার
তেড়ে আসে ভয়
তেড়ে আসে পরাজয়
হে প্রভু
তবে সরল পথে চলার সুযোগ দাও
তোমার পথেই তো সুখ
তোমার পথেই তো শান্তি
হে প্রভু
তবে শান্তির পথে নিয়ে যাও
মুক্তি দাও
সুখ দাও
ভুল পথে যাব না আর
যাব তো সরল পথে॥
....বিস্তারিত
আবু হাসান তাহের-এর কবিতা
লাহাব
ধ্বংস তো হয়ে গেছে
আবু লাহাব
ধ্বংস তো হয়নি
তার করা পাপ।
ধন-সম্পদগুলো
লাগলো না কাজে
মরণ তো তার হলো
একেবারে বাজে।
লেলিহান আগুনে
হবে তার ঠাঁই
হিসাব তো হবে তার
করে পাইপাই।
ক্ষমতার দম্ভ
পুড়ে হবে ভম্ব।
স্ত্রীটাও ছিল তার
উসকানিদাতা
গালাগালি করে যেত
বলতো যা-তা।
দুজনার স্থান হবে
জ¦লন্ত আগুন
জীবিত লাহাব থেকে
দূরে দূরে ভাগুন।
এই থেকে নেই যদি তবে
মোরা শিক্ষা
সময় থাকতে নেই মোরা
রাসূলের দিক্ষা ॥
....বিস্তারিত
ওয়াহিদ আল হাসান-এর কবিতা
জেগে ওঠো ঐক্যবলে
সুস্থ দেহে বেঁচে থাকার
নেই অধিকার যে ভূমিতে
রোজা কিংবা ঈদের হাসি
হাসবো বলো কোন যুক্তিতে!
মৃত্যু ভয়ের আতঙ্কে হায়
কাটে যাদের জীবননদী
তাদের কাছে সাহরি ইফতার
ব্যথা জাগায় নীরবধি।
বিশ্ব মুসলিম শান্তি খোঁজে
গুনে গুনে তসবিহ দানা
মরছে স্বজন নিথর তবু
অনুভূতির শক্ত ডানা।
জেগে ওঠো ঐক্যবলে
থেকো না ভাই আর ঘুমিয়ে
ধ্বংস হয়ে যাবে উড়ে
দখলদারি লেজ গুটিয়ে!
....বিস্তারিত
আত্মবিশ্লেষণে সামাজিক উৎসব ঈদুল ফিতর
এম. মুহাম্মদ আব্দুল গাফ্্ফার
পবিত্র মাহে রমযানের দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদুল ফিতরের উৎসব। শাওয়াল মাসের চাঁদ পশ্চিমাকাশে উদয়ের সাথে সাথে সিয়াম পালনকারী মুসলিম জাতি ঈদের খুশিতে পুলকিত হয়ে ওঠে। ইসলামের পরিভাষায় ঈদ অর্থ আনন্দ, আর ঈদুল ফিতর অর্থ হলো সাওম অর্থাৎ রোজার সমাপ্তিলগ্নে পানাহার শুরু করা। মুসলমানদের দুটি ঈদের মধ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয় শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ও ঈদুল আজহার ঈদ হয় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে।
ঈদ শুরু হয় দ্বিতীয় হিজরী সনে। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আনাস (রা.) থেকে এ সম্পর্কিত একটি হাদীস এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ‘নবী (সা.) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় এলেন, তখন তিনি দেখলেন যে, লোকজন বছরে দুটি নির্দিষ্ট দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ উপভোগ করে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, এ দুটি দিন কেমন? তারা বলেন, আমরা ইসলামের আগমনের পূর্বে এ দুটি দিনে খেল-তামাশা ও আনন্দ উপভোগ করতাম। নবী (সা.) বলেন, আল্লাহ এ দুটি দিনের পরিবর্তে দুটি উৎকৃষ্টতর দিন নির্বাচিত করে দিয়েছেন। একটি ঈদুল ফিতরের দিন এবং অন্যটি ঈদুল আজহার দিন।’ (আল হাদীস)। ইসলাম পূর্বযুগে মদীনায় প্রচলিত ওইসব উৎসব ছিল কলুষ-কালিমায় পরিপূর্ণ জঘন্যতম পাপাচারের সমাহার মাত্র। ....বিস্তারিত
দৃষ্টিভঙ্গি বদলান : জীবনও বদলে যাবে
॥ এডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী॥
আমরা সাধারণত রিজিক মানে বুঝি খাদ্যদ্রব্য, টাকা-পয়সা বা আর্থিক সচ্ছলতাকে। অথচ এগুলো হচ্ছে রিজিকের সর্বনিম্ন স্তর। রিজিকের সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছে শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা। নেক জীবনসঙ্গী, নেক সন্তান, নেক বন্ধু-বান্ধবও রিজিকের অন্তর্ভুক্ত। একটা বিষয় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, দৈহিক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক যন্ত্রণা মানুষকে অনেক বেশি ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। অথচ আমাদের দেশের বর্তমান আর্থসামাজিক অস্থির পরিবেশের কারণে প্রত্যহ আমাদের মধ্যে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বেড়েই চলছে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো সহজে মোকাবিলা করতে আমরা প্রায়ই ব্যর্থ হচ্ছি। ফলে মানসিকভাবে আমরা ক্রমেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে ক্রমেই মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকবে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকেয়েট্রিতে প্রকাশিত ‘কান্ট্রি পেপার অন মেন্টাল হেলথ-বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ১৮.৭ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত। মানুষের মাঝে এ উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্থিরতা একপর্যায়ে মানুষকে হতাশা ও আত্মহননের দিকে নিয়ে যায়। ....বিস্তারিত
সাদকাতুল ফিতর ও ঈদ উৎসব
॥ নূরুন্নাহার নীরু॥
পবিত্র মাহে রমযানের একমাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়ালের প্রথম দিনই মুসলমানদের জন্য এক আনন্দ-উৎসবের দিন, ইতিহাসে যা ঈদুল ফিতর নামে অভিহিত। যার অর্থ রোজা খোলার আনন্দ। কিন্তু আল্লাহ-রাসূলের অনুমোদিত বিশ্ব মুসলিমের জন্য এ দিবসটি শুধুই কী আনন্দ-ফুর্তির দিন কিংবা নিসক ভোগবিলাসের জন্যই নির্ধারিত? নাহ! কখনো নয়। সাম্যের ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম ইসলাম দাবি করে ভিন্ন কিছু। আর সেটিরই বাস্তব রূপ ঈদুল ফিতরে নিহিত এবং ঈদুল ফিতরের সে আনন্দ উপভোগ করার মাধ্যম যা, তাই হচ্ছে সাদকাতুল ফিতর।
কাজী নজরুল ইসলাম সে কথাটিই তার কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন এভাবে: “কারো আঁখি জলে কারো ঘরে ফিরে জ্বলিবে প্রদীপ/দুজনার হবে বুলন্দ নসীব।/এ নহে বিধান ইসলামের।/ঈদুল ফেতর আনিয়াছে তাই নববিধান,/ওগো সঞ্চয়ী উদ্বৃত্ত যা করবে দান,/ক্ষুধার অন্ন হক তোমার।/ভোগের পেয়ালা উপচায়ে পড়ে তব হাতে,/তৃষ্ণাতুরের হিসসা আছে এ পেয়ালাতে,/দিয়া ভোগ কর, কর বীর দেদার।”
সুবহানাল্লাহ! এত সুন্দর আহ্বান যে ধর্মে সে বিধান পরিপূর্ণ করতেই প্রয়োজন সাদকাতুল ফিতর একটা যুগান্তকারী ব্যবস্থা।
তাহলে আমাদের অবশ্যই জানতে হচ্ছে: সাদকাতুল ফিতর কী? কেন? কীভাবে? কার জন্য? কে দেবেন? কাকে দেবেন? ....বিস্তারিত
সারপ্রাইজ ডে
তৌহিদুর রহমান
জেনিফার আর আকাশ দুজনের পাঁচ বছরের সম্পর্ক। প্রতি বছর ভালোবাসা দিবসে তেমন কিছু পরিকল্পনা তাদের থাকে না। কারণ আকাশের মতে, ভালোবাসার কোনো আলাদা দিন থাকে না, প্রতিদিনই তার কাছে ভালোবাসার দিন। তাই জেনিফার ও আকাশ কেউ কাউকে আলাদা করে এ দিনটাতে কিছু বলে না। তবে জেনিফার যেকোনো দিন মনে মনে আকাশের জন্য কোনো একটি বিশেষ উপহার ঠিক করে রাখে এবং আকাশের পিতা-মাতার মৃত্যুদিনে সেই উপহার আকাশকে ডিএইচএল সার্ভিসে পাঠিয়ে দেয়। এভাবেই দিন তাদের সামনে এগিয়েছে।
জেনিফার ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক। আর আকাশ সাংবাদিক রাশেদ-ফাহিমা দম্পতির একমাত্র আকাশ।
ওদের কখনো সরাসরি দেখা হয়নি, শুধু ফোনে কথা হয়, দেখা হয়। কিন্তু এবার আকাশের বিশেষ অনুরোধে আকাশের প্যারেন্টস হত্যা দিবসে অর্থাৎ ১১ ফেব্রুয়ারি যেভাবেই হোক, বিশেষভাবে নিজের পিতা-মাতার অনুমতি নিয়ে হলেও অন্তত জেনিফারকে একবারের জন্য বাংলাদেশে আসতে বলেছে আকাশ। জেনিফার ভেবে পায় না কী জন্য আকাশ যেতে বলছে, কোনো কারণও বলছে না, কী হতে পারে কারণ! সেদিন ‘সারপ্রাইজ ডে’ না অন্য কিছু। কিন্তু এর আগেও তো প্রতি বছর প্যারেন্টস হত্যা দিবস অর্থাৎ এরকম দিন একবার করে এসেছে। ....বিস্তারিত
সামাজিক নিরাপত্তার গ্যারান্টি যাকাত
॥ মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ॥
যাকাত ইসলামী সমাজ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অনন্য বিধান। যাকাত একদিকে দরিদ্র, অভাবী ও অক্ষম জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তার গ্যারান্টি; অন্যদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। যাকাত সম্পদ পবিত্র করে, বিত্তশালীদের পরিশুদ্ধ করে, দারিদ্র্যমোচন করে, উৎপাদন বৃদ্ধি করে, অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে এবং সমাজে শান্তি আনে। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়টি হচ্ছে যাকাত। ঈমানের পর সালাত এবং তার পরই যাকাতের স্থান।
যাকাত ইসলামের অন্যতম রুকন বা স্তম্ভ। অধিক সাওয়াবের আশায় অনেকে রমযান মাসে যাকাত আদায় করে থাকে। যদিও যাকাতের সঙ্গে রমযানের সম্পর্ক নেই, তথাপি এ মাসে যাকাত আদায় করা অধিক সওয়াবের কাজ।
পূর্ববর্তী আসমানি ধর্মে যাকাত: যাকাতব্যবস্থা অতীতের সব নবীর উম্মতের ওপর অবশ্য পালনীয় ছিল। তবে সম্পদের পরিমাণ ও ব্যয়ের খাত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছিল। যেমনÑ ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর বংশের নবীদের কথা উল্লেখ করার পর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘আর তাদের করেছিলাম নেতা। তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে পথ প্রদর্শন করত। তাদের ওহি প্রেরণ করেছিলাম সৎকর্ম ....বিস্তারিত
আনন্দের বারতা নিয়ে আসে ঈদুল ফিতর
॥ এম ওবায়দুল্লাহ আনসারী ॥
বিশ্বব্যাপী বার বার রমযান আসে মুমিন-মুত্তাকিদের মাঝে রহমত, বরকত ও নাজাতের পয়গাম নিয়ে। রমযান আসে মুমিন-মুত্তাকিদের মাঝে আনন্দের বারতা নিয়ে। এর অতি-উত্তম কারণ রমযান এলেই মুমিনের সাওয়াব কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় এবং গুনাহ মাফের মোক্ষম সুযোগ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়ালের চাঁদ দেখে যে উৎসব বিশ্বের মুসলমানরা পালন করে থাকেন, সেটিই পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর এ ঈদুল ফিতর মুসলমানদের এক গুরুত্বপূর্ণ ও অনাবিল আনন্দের উৎসব। এদিন প্রতিটি মুসলিমসত্তা নবউৎসাহ-উদ্দীপনায় জেগে ওঠে।
নবী কারীম সা. নিজে ঈদ পালন করেছেন এবং সাহাবীদের ঈদ উদযাপন করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। মদীনায় হিজরত করে যাওয়ার পর রাসূল সা. দেখলেন, লোকজন দুটি দিনকে উদযাপন করে খেলাধুলা করছে। তাদের এ খেলাধুলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, আমরা জাহেলি যুগ থেকেই এ দুদিন খেলাধুলা করতাম। তখন মহানবী সা. বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, এ দুদিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটি দিন দিয়েছেন। তা হলোÑ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।’ (আবু দাউদ)।
বিশ্বের মুসলমানরা অনাবিল আনন্দের ....বিস্তারিত
শাহীন আরা আনওয়ারীর কবিতা
ঈদ আনন্দ আজ
ঈদ আনন্দ আজ কান্না হয়ে ভাসে। রক্তে ভেজা বাতাসে কেবলই মুসলিম মজলুমের আহাজারি। আমি কিভাবে ঘুমোতে পারি? আনন্দ আজ অশ্রু হয়ে ঝরে ঝরে শত বেদনার বারি। আমি কিভাবে হাসতে পারি? মজলুমের বেদনায় ভেঙ্গে যায় বুক। ভেসে ওঠে রক্ত মাখা তাজা শহীদের মুখ। নিপীড়ত অসহায় ক্ষুধার্ত ওরা আনন্দ আজ ভেসে গেছে। ডুকরে কাঁদে আরশ পানে হৃদয়ের রক্ত ঝরছে কেবল মজলুম নির্যাতিতের শানে। ওদের কষ্টে আঁখি জলে আগ্রাসিত কেবল মৃত্যুর কবলে। কাশ্মীর বন্দী সিরিয়া কাঁদে রক্তে ভেজা ফিলিস্তিনের মাটি হে মুসলিম জাগো এবার ঈমান হোক নিখুঁত খাটি। আনতেই হবে জাগতেই হবে জমীনে বিজয় ঈমানেরই হবে। হে মাওলা দাও তুমি শক্তি দাও মনোবল। তুমি যে দয়াময়। আসুক এবার আসতেই হবে আল্লাহর সাহায্য মুসলিমের বিজয়। সব মুসলিম এক হোক একই বন্ধনে গাথাঁ। হে আল্লাহ বিজয় দাও তুমি যে মহান ....বিস্তারিত